
Bangla Waz Mahfil Collections
ওয়াজ মাহফিলের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
মুসলমানদের ঈমান-আমল, আকিদা-বিশ্বাসের সংশোধনে ও আত্মিক পরিশুদ্ধির ক্ষেত্রে ওয়াজ মাহফিলের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে অন্য সব আমলের মতো ওয়াজের উদ্দেশ্য হতে হবে মানুষকে ইহ-পরকালীন কল্যাণের পথনির্দেশ করে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করা।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ভাষার প্রাঞ্জলতা শিখে মানুষের অন্তরকে তার প্রতি আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার কোনো ফরজ ও নফল ইবাদত কবুল করবেন না। (মিশকাত, হাদিস নং- ৪১০)
ইমাম গাজালি (র.) তাঁর লিখিত গ্রন্থ ‘আইয়্যুহাল ওয়ালাদ’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘ওয়াজকারীদের ওয়াজ দ্বারা উদ্দেশ্য যেন হয় মানুষকে দুনিয়া থেকে আখেরাতের প্রতি, গোনাহ থেকে নেকির প্রতি, লোভ থেকে পরিতুষ্টির প্রতি আহ্বান করা। এরই ভিত্তিতে বক্তারা শ্রোতাদের পরকালমুখী ও দুনিয়াবিমুখ করে গড়ে তোলার প্রয়াস করা। ইবাদত-বন্দেগি ও তাকওয়ার দীক্ষা দান করা। সর্বোপরি আত্মিক অবস্থা পরিবর্তনের সাধনা করা। এটাই প্রকৃত ওয়াজ। আর যে বক্তা এরূপ উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে ওয়াজ করবে তার ওয়াজ মানুষের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। দ্বীনদার মুসলমানরা যেন এরকম বক্তা ও ওয়াজ সম্পূর্ণরূপে পরিহার করে।’ (মাজালিসুল আবরার-৪৮২)
বক্তাদের জন্য পাঁচটি বৈশিষ্ট্য থাকা জরুরি– ১. ইলম বা কোরআন-সুন্নাহর পর্যাপ্ত জ্ঞান। কেননা ইলমহীন ব্যক্তি সঠিক ও বিশুদ্ধ বয়ান করতে অক্ষম। ২. আল্লাহর সন্তুষ্ট ও তাঁর দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্য। ৩. যা বয়ান করবেন তদানুযায়ী নিজে আমল করা। ৪. শ্রোতাদের ওপর দয়ার্দ্রও বিনম্র হয়ে কথা বলা। ৫. ধৈর্যশীল ও সহনশীল হওয়া। (ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি : ৪/১১০)
বক্তাদের জন্য দুইটি গুণ অত্যাবশ্যক– প্রথমটি হলো, তিনি অপরকে যে পথের উপদেশ দেবেন, নিজে সেই পথে চলবেন। অর্থাৎ, অপরকে দীনের দাওয়াত দেওয়ার মতো নিজে দ্বীনের পথে চলবেন। দ্বিতীয় হলো, ওয়াজ করবেন আখেরাত অর্জনের জন্য। দুনিয়ার সুনাম, সুখ্যাতি বা বিত্ত অর্জনের অভিলাষে নয়। বক্তাদের পথ খরচ বা তার অমূল্য সময়ের জন্য যে হাদিয়া দেওয়া হয়, তা অবশ্যই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং সন্তুষ্টিচিত্তে হওয়া উচিত। আয়োজকদেরও উচিত যে বিজ্ঞ আলেমকে তারা অতিথি ও আলোচক হিসেবে দাওয়াত করছেন তাদের যথাযথ সম্মান করা।
তবে চুক্তিভিত্তিক টাকা নিয়ে কিছু বক্তা ওয়াজ করেন, তাদের কথায় মানুষের হিদায়াত কতটুকু হতে পারে সে নিয়ে হক্কানি উলামায়ে কেরাম সবসময়ই সন্দেহ প্রকাশ করে থাকেন। কেননা কোরআনুল কারীমে আল্লাহ তা’য়ালা এরশাদ করেন– ‘তোমরা তাদের অনুসরণ করো যারা দীনি বিষয়ে কোনো পারিশ্রমিক চায় না এবং তারা সুপথপ্রাপ্ত।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত- ২১)
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআনে মুফতি শফী (র.) লিখেছেন, দুই শ্রেণির বক্তার বক্তৃতায় মানুষের কোনো হিদায়াত হয় না। একশ্রেণি, যারা মানুষকে আমলের কথা বলে, ভালো পথে চলার কথা বলে আর নিজেই এর ওপর আমল করে না। আরেক শ্রেণি হলো, যারা ওয়াজ করে মানুষের কাছে টাকা চায়।
আল্লামা ইবনুল জওযী (র.) ‘তালবিসুল ইবলিস’ গ্রন্থে বক্তাদের হালহকিকত বর্ণনার অধ্যায়ে লিখেছেন, আগেকার যুগে বক্তারা আমলওয়ালা আলেম ছিলেন। এখনকার সময়ে আমলওয়ালা আলেমের খুবই অভাব। এখনকার সময়ে এ কাজটিকে জাহেলরা তাদের পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। তারা জরুরতে দ্বীন ও আমলের আলোচনা বাদ দিয়ে মূর্খ আওয়ামের পছন্দসই বিভিন্ন কিচ্ছা-কাহিনী বর্ণনায় প্রবৃত্ত হয়েছে। (তালবিসুল ইবলিস-১৬৮)
আল্লামা ইবনুল জওযী (র.) আরো বলেন, এই যুগে অধিকাংশ বক্তাই ওয়াজে বিভিন্ন কিচ্ছা-কাহিনী বলে সময় অতিবাহিত করে দেন। জরুরি ফারায়েজ ও আমলের আলোচনা তাতে খুব অল্পই হয়ে থাকে। তাদের ওয়াজ সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু থেকে অসম্পূর্ণ থাকে। কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা অসম্পূর্ণ থাকে। কিচ্ছা-কাহিনী শুনে শ্রোতারা আর কতটুকু উপকৃত হতে পারেন? (তালবিসুল ইবলিস- ১৭১)
মুফতিয়ে আজম ফয়জুল্লাহ (র.) ‘রাসায়েলে মুফতি আযম’ গ্রন্থে লিখেছেন, ওয়াজ হলো ‘ইনজা’ তথা মানুষকে গোনাহ থেকে ভয় দেখানো ও সতর্ক করার নাম। মুফতি ফয়জুল্লাহ (র.) আরো বলেন, বর্তমান যুগে ওয়াজ মাহফিলে খুব কম লোকই সহিহ নিয়ত নিয়ে আসে এবং বক্তারাও দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্যে আসেন না। পার্থিব স্বার্থের জন্য বক্তারা মাহফিল করে থাকেন। শ্রোতারাও সুন্দর কণ্ঠওয়ালা বক্তাদের নাম শুনলে তার ওয়াজ শুনতে আসেন। আর এ কারণেই হিদায়াত না নিয়ে বঞ্চিত হয়ে বাড়ি ফিরে যান।’ (ইযহারুল মুনকারাত-৫) কাজেই ওয়াজের আয়োজক, বক্তা এবং শ্রোতাসহ সবার উদ্দেশ্য হতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
মূল: এহসান বিন মুজাহির
# বাংলা ওয়াজ মাহফিল (MP3) কালেকশন সমগ্র:
[নিচের তালিকাবদ্ধ সম্মাণিত বক্তাগণের ওয়াজ কালেকশন (Audio Format) ডাউনলোড করতে যেকোন একটি সার্ভারের ডাউনলোড লিঙ্ক বেছে নিন।]
০১. আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী
Download: Drive Link
০২. আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব
Download: Drive Link
০৩. আল্লামা তোফাজ্জল হক হবিগঞ্জী
Download: Drive Link
০৪. আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী
Download: Drive Link
০৫. আল্লামা মামুনুল হক
Download: Drive Link
০৬. আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী
Download: Drive Link
০৭. মাওলানা আবদুল হালিম বুখারী
Download: Drive Link
০৮. মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী
Download: Drive Link
০৯. মাওলানা জমির উদ্দিন নানুপুরী
Download: Drive Link
১০. মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী
Download: Drive Link
১১. মাওলানা হাসান জামিল
Download: Drive Link
১২. মুফতি ফজলুল হক আমিনী
Download: Drive Link
১৩. মুফতি ফয়জুল করিম
Download: Drive Link
১৪. মুফতি মুস্তাকুন্নবী কাসেমী
Download: Drive Link
১৫. মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম
Download: Drive Link
♦ অনলাইনে বই ক্রয়ের জনপ্রিয় কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম –
- https://rokomari.com
- https://boibazar.com
- https://bookhousebd.com
- https://wafilife.com
- https://ruhamashop.com