প্রখ্যাত লেখক ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী রচিত সাহিত্যকর্ম

[PDF Download]

কিতাবের ক্যানভাসে

 

শরিয়তের মানদণ্ডে রজব মাসের ফজিলত:

সীমাহীন প্রজ্ঞার দাবি অনুযায়ী আল্লাহ তা‘আলা কিছু মাস ও দিবসকে অন্যান্য মাস ও দিবসের উপর মর্যাদাপূর্ণ করেছেন। উদ্দেশ্য সৎকর্ম সম্পাদনে মানুষের প্রেরণা উৎসাহে নতুন মাত্রা সংযোগ করা। অধিক মাত্রায় আমলে সালেহ করে উৎকর্ষ সাধনের পথ সুগম করা। তবে মানব ও জিন জাতির দুষ্টচক্র আল্লাহর বান্দাদেরকে সরল পথ থেকে বিচ্যুত করতে সদা সক্রিয়। তাইতো অবস্থান নিয়েছে সম্ভাব্য সকল পথে যা কিছু উত্তম তা থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নিতে। আল্লাহর রহমত ও করুণা প্রাপ্তির মৌসুম অসার কর্ম, আয়েশ আস্বাদন, প্রবৃত্তিচর্চা ও অযাচিত সুখ উপভোগের উপযুক্ত সময় হিসেবে উপস্থাপন করে।

পরিচ্ছন্ন হৃদয় তবে ধর্ম বিষয়ে জাহিল, অথবা স্বার্থলুব্ধ ব্যক্তি , ধর্মীয় বা সামাজিক নেতৃত্ব ধরে রাখার লিপ্সা যাকে তাড়িয়ে বেড়ায় প্রতিনিয়ত এরূপ ব্যক্তিদের শয়তান উৎসাহ প্রদানের পাত্র বানায়। সৎকর্ম চর্চা ও সুন্নত অনুসরণে অধিক মাত্রায় সচেতন হতে হবে এমন মূহুর্তগুলো বিদআতপূর্ণ কর্মকাণ্ডে ভরে দিতে এদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুমাত্রায়।

হাস্‌সান ইবনে আতিইয়া বলেন : কোনো জাতি যে পরিমাণে তাদের ধর্মে বেদআতের (নব আবিষ্কৃত বিষয়) এর প্রবেশ ঘটায় সে পরিমাণ সুন্নাত তাদের মধ্যে হতে উঠিয়ে নেয়া হয়। আইয়ুব সাখতিয়ানি বলেছেন, বেদআত পালনকারী ব্যক্তি শ্রম সাধনায় যত এগোয় আল্লাহর সান্নিধ্য থেকে সে তত পিছোয়।

প্রসিদ্ধ বেদআতপূর্ণ অনুষ্ঠানমালার মধ্যে অন্যতম একটি হল, মুসলিম বিশ্বের কোনো কোনো অঞ্চলে ঘটা করে রজব মাসের বিশেষ দিনক্ষণ উদযাপন। বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে সকল দিক থেকে বিষয়টি পর্যালোচনার চেষ্টা করেছি। আশা করি বেদআত ও কুসংস্কারে লিপ্ত ব্যক্তিরা পথের দিশা পাবেন ও শরিয়ত সিদ্ধ পন্থায় আল্লাহর ইবাদত আঞ্জাম দিতে সক্ষম হবেন।

অন্যান্য মাসের তুলনায় রজবের কি ভিন্ন কোনো বৈশিষ্ট্য আছে ?

ইবনে হাজর বলেছেন: রজবের ফজিলত, রজব মাসে রোজা অথবা রজবের সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখের রোজা, এ মাসের বিশেষ কোনো রাত্রি উদযাপন বিষয়ে বিশুদ্ধ ও শরিয়াতি দলিল-হওয়ার মতো শক্ত কোনো হাদিস বর্ণিত হয় নি। ইমাম আবু ইসমাঈল আল হারাবি আল হাফেজ এ ব্যাপারটি আমার পূর্বেই নিশ্চিত করে বলেছেন। শুদ্ধ সনদে তা থেকে ও অন্যান্যদের থেকে বিষয়টি আমরা বর্ণনা করেছি।

তিনি আরো বলেন, রজবের ফজিলত, রজব মাসের রোজার ফজিলত, অথবা সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখের রোজার ব্যাপারে যে হাদিসগুলো এসেছে তা দুপ্রকার: দুর্বল ও বানোওয়াট। দুর্বলগুলো বর্ণনা করছি আর বানোওয়াট গুলোর প্রতি প্রথমে তড়িৎ ইঙ্গিত দিচ্ছি ও পরে বিস্তারিত বর্ণনায় তা পরখ করে দেখছি।

সালাতুর রাগায়েব :

সালাতুর রাগায়েব এর বর্ণনায় আনাস (রাঃ) থেকে একটি মাওজু-বানোয়াট হাদিস এসেছে— ‘বৃহস্পতিবার (রজব মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার) যে ব্যক্তি রোজা রাখবে, তারপর এশার নামাজের পর রাত শেষ হওয়ার পূর্বে বারো রাকাত নামাজ পড়বে, প্রতি রাকাতে এক বার সূরা ফাতেহা পড়বে ও তিন বার ( ইন্না আনযালনাহু ফি লাইলাতিল কাদরি ) পড়বে, ও ১২ বার ( কুল হুআল্লাহু আহাদ) পড়বে, প্রতি দুরাকাত অন্তে সালাম ফিরাবে, নামাজ থেকে ফারেগ হয়ে আমার প্রতি সত্তুর বার দরুদ পাঠ করবে, নামাজের সিজাসমূহে ( সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুল মালায়েকাতি ওয়ার রুহ) সত্তুর বার পড়বে, সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে সত্তুর বার ( রব্বিগফির ওয়ারহাম ও তাজাওয়ায আম্মা তালাম, ইন্নাকা আনতাল আযীযু আযাম) পড়বে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মিটিয়ে দেবেন।’

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘আমার আত্মা যার হাতে তাঁর কসম, এই নামাজ আদায় করলে— আদায়কারী পুরুষ হোক বা নারী – আল্লাহ তার সমস্ত পাপ মোচন করে দেবেন। হোক না তা সমুদ্রের ফেনা, পৃথিবীর তাবৎ বালি-কণা, বৃক্ষরাজির পত্রসংখ্যা ও পর্বতমালার ওজন পরিমাণ। এরপর কেয়ামত দিবসে তার পরিবারের মধ্যে দোজখ অবধারিত হয়ে গিয়েছে এমন সাতশ ব্যক্তির ব্যাপারে তাকে শাফাআতকারী হিসেবে গ্রহণ করা হবে।’

প্রাজ্ঞ ওলামাদের বক্তব্য:

ইমাম নববী (রাহি.) বলেন: ইহা একটি জঘন্য বেদআত, কঠিনভাবে পরিত্যাজ্য শরিয়ত গর্হিত কাজ। এতে শামিল রয়েছে বহু মুনকার। তাই এ কাজের সংস্লিষ্টতা অবশ্য বর্জনীয়। এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া বাধ্যতামূলক, ও যারা এতে লিপ্ত তাদেরকেও বারণ করা প্রয়োজন।

ইবনে নাহ্‌হাস বলেন: ইহা একটি বেদআত, আর এ ব্যাপারে উল্লেখিত হাদিসসমূহ হাদিস-বিশেষজ্ঞদের ঐক্যমত্য অনুযায়ী, মাওজু-বানোওয়াট।

ইবনে তাইমিয়্যাহ (রাহি)বলেন: সালাতুর রাগায়েবের কোনো ভিত্তি নেই। ইহা বরং বেদআত। তাই এ নামাজ একাকী হোক বা জামাতবদ্ধভাবে— কোনোভাবেই মোস্তাহাব নয়। মুসলিম শরিফে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে এক বর্ণনায় এসেছে— শুক্রবার রাতকে ইবাদতের উদ্দেশ্যে অথবা শুক্রবার দিনকে রোজার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট করতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিষেধ করেছেন। আর এই মর্মে বর্ণিত হাদিসটি ওলামাদের ঐক্যমতে মিথ্যা-বানোয়াট। সালফে সালেহীন ও ইমামদের কেউ উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেন নি।

হাদিসটি কীভাবে তৈরি করা হল ইমাম তারতুসি তার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন— আমাদের এখানে, বায়তুল মাকদিসে, রজব ও শাবান মাসে সালাতুর রাগায়েব বলতে কখনো কিছু ছিল না। এর উন্মেষ ঘটে চারশত আটচল্লিশ সালে। আমাদের এখানে নাবলুস থেকে ইবনুল হামরা নামের এক ব্যক্তি এলেন। তিনি চমৎকার কুরআন তিলাওয়াত করতে পারতেন। তিনি দাঁড়ালেন ও মাসজিদুল আকসায় শাবানের মধ্যরজনীতে নামাজ আদায় করলেন।..

(বিস্তারিত পড়ুন)

বই: শরীয়তের মানদণ্ডে রজব মাসের ফজিলত

লেখক: ফায়সাল বিন আলী আল বা’দানী

 

 


# লেখকের রচিত গ্রন্থাবলীর (PDF) কালেকশন সমগ্র:

[নিচের তালিকাবদ্ধ বইয়ের নাম হতে আপনার প্রয়োজনীয় পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করতে যেকোন একটি সার্ভারের ডাউনলোড লিঙ্ক বেছে নিন]

১. ইখলাস মুক্তির উপায় – ফয়সাল বিন আলী আল বাদানী

Download: 1.      Drive Link          ||

২. দুআ মুনাজাত: কখন কিভাবে? – ফায়সাল বিন আলি আল বাদানী

Download: 1.      Drive Link          ||

৩. রাসূল (ﷺ) যেভাবে রমযান যাপন করেছেন – ফয়সাল বিন আলি আল বাদানী

Download: 1.      Drive Link           ||

৪. হজ্জ পালন অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নান্দনিক আচরণ – ফায়সাল বিন আলী আল বাদানী

Download: 1.      Drive Link           ||

৫. শরীয়তের মানদণ্ডে রজব মাসের ফজিলত- ফয়সাল বিন আলী আল বা’দানী

Download: 1.      Drive Link           ||

 

[ বি: দ্র: ] বই পড়ুন, বই কিনুন, প্রিয়জনকে বই উপহার দিন। আমাদের সাইটের কোন বই ভালো লাগলে অনুগ্রহপূর্বক মূল বইয়ের হার্ডকপি লাইব্রেরী হতে সংগ্রহ করুন।

মনে রাখবেন, আপনার ক্রয়কৃত বই প্রেরণা যোগায় লেখক ও প্রকাশককে নতুন বই প্রকাশ করতে। লেখক, প্রকাশক ও পাঠক সমাজকে সুসমৃদ্ধ করার প্রয়াসে মূল বই ক্রয়ের কোনো বিকল্প নেই।

অনলাইনে বই ক্রয়ের জনপ্রিয় কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম –

  1. https://rokomari.com
  2. https://boibazar.com
  3. https://kitabghor.com
  4. https://wafilife.com
  5. https://ruhamashop.com
Back to top button
error: Python Encryption !!!